চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি জানতে চান। কারিপাতা ব্যবহার
করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায় জানেন কি না। জেনে থাকলে আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন।
কারণ আজকে আমরা আলোচনা করব চুলের যত্নে কারি পাতার নানাবিধ ব্যবহার সম্পর্কে।
সেই সাথে আরো আলোচনা করব ত্বকের যত্নে এবং চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের
উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে আলোচনা শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচীপত্র চুলের যত্নে ক্যারিপাতা ব্যবহার করুন ছয়টি উপায়ে
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারের উপকারিতা অনেক। সেই প্রাচীনকাল থেকে চুলের
যত্নে কারী পাতাও নানান ভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু চুলের যত্নে এই কারি পাতা
ব্যবহারের উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা ।তাহলে চলুন কথা না দাঁড়িয়ে চুলের
যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপকারিতা গুলো আপনাকে জানিয়ে দেই।
কারি পাতা চুল পাকা রোদ করে। আপনারা যারা অল্প বয়সে চুল পাকার সমস্যায় ভুগছেন
তারা আজ থেকে চুলকানি পাতার ব্যবহার শুরু করুন। আপনি কারি পাতার সাথে পেঁয়াজের
রস মিশিয়ে এই প্যাকটি আপনার চুলে ব্যবহার করুন ।এতে আপনার চুল থাকবে ভালো এবং
সেই সাথে আপনার বয়স ধরে রাখতেও সাহায্য করবে।
চুল পড়া রোধ করে কারি পাতা। চুল পড়া বর্তমানে সকলেরই একটি সাধারন সমস্যা। এই
চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে আপনি কারি পাতা দুধের সাথে মিশিয়ে একটি গণ পেস্ট
তৈরি করুন । এই পেসটি আপনার চুলে ভালো করে লাগান। চুলে লাগানোর এক দুই ঘন্টা পর
চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করলে আপনি চুল
পড়ার সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে।
কারি পাতা চুল ঝলমলে করে। কারি পাতায় রয়েছে প্যান্টি অক্সিডেন্ট যার অক্ষর
চুলকে করে তোলে প্রাণবন্ত এবং ঝলমলে। যার ফলে শুধু কারি পাতা পেস্ট করে লাগালেও
আপনি পাবেন ঝলমলে চুল।
পাতা খুশকি দূর করে কারি পাতায় রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়া। এন্টিফাঙ্গাল এন্টি
ইন ফ্লোমেট্রি বৈশিষ্ট্য যা আপনার মাথার ত্বককে খুশকি এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে
রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাছাড়া আপনার মাথার ত্বকে ফাঙ্গাস জনিত সংক্রমণ
প্রতিরোধ করতে ক্যারিপাতা বেশ কার্যকর।
কারি পাতা চুল বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন নিয়ম করে কারি পাতা ব্যবহার করলে এটি
আপনার চুল বৃদ্ধিতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। আপনি কিছু কারী
পাতার রোদে শুকিয়ে সেটি গুলো করে এক টেবিল চামচ দই এর সাথে মিশিয়ে সেটি আপনার
চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান । এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার মাথার চুল
এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে।
কারি পাতা চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করে। আপনার ঘন কালো লম্বা চুল থাকার পরেও
যদি চুলের আগা ফাটার সমস্যা থেকে থাকে। তাহলে সেটি দেখতে বেশ তিব্বত কর লাগে।
চুলের এই আগা ফাটা দূর করতে আপনি নিয়মিত কারি পাতা পেস্ট
আপনার চুলে লাগান। আস্তে আস্তে আপনার চুলের আঘাটা অনেকটাই কমে গেছে।
চুলের গ্রণহিকোষ মজবুত করে। কারি পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো
এসিড যা আপনার চুলের কোষ গ্রহন হিকে মজবুত এবং শক্তিশালী করে তোলে।
চুল পাতলা হওয়ার রোধ করে। প্রোটিন এবং বিটা ক্যারোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস হল
কারি পাতা। আর এই দুটি উপাদানই আপনার মাথার চুল পড়া এবং চুল পাতলা হওয়া
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
চুলের যত্নে কারী পাতার কদর বরাবরই অনেক বেশি। তাছাড়া কারি পাতার মধ্যে এমন সব
উপাদান রয়েছে যেগুলি আপনার চুল ও স্কেলের যত্ন নেয়। আর তাই চুলের যে কোন
সমস্যার রুখতে আপনি আজ থেকে ব্যবহার শুরু করুন এই কারি পাতা।
কারিপাতা এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার করতে আপনি টক দই এবং কারি পাতা একসাথে ব্যবহার
করতে পারেন। কারণ টক দই এ রয়েছে লেকটিক এসিড যা আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং
চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। আর তাই কারিপাতা এবং টক দই এর হেয়ার ব্যাগ
চুলে ম্যাজিক এর মত কাজ করে। এবার চলুন এই হেয়ার প্যাকটি আপনি কিভাবে তৈরি করবেন
তা জেনে নিন।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
কারি পাতা এক মুঠো পরিমাণ এবং
টক দই তিন চার টেবিল চামচ।
দইয়ের সাথে ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। অতঃপর এই হিয়ার
মাস্কটি আপনার মাথার ত্বকের এবং চুলে ভালোমতো মেসেজ করে লাগিয়ে ফেলুন।
এমন ভাবে লাগাতে হবে যেন আপনার চুলের আঘাত থেকে ঘোরা পর্যন্ত সম্পূর্ণ চুল এই
পেস্ট এর আবরণে ঢেকে যায়। এভাবে ৩০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে
ফেলুন। তৈরির ক্ষেত্রে আপনি চাইলে বিকল্প হিসেবে টক দইয়ের পরিবর্তে দুই টেবিল
চামচ দুধ ও ব্যবহার করতে পারেন।
টক দই এবং ক্যারি পাতার এই হেয়ার প্যাকটি আপনি পড়তে সপ্তাহে একবার ব্যবহার
করবেন এতে করে ভালো ফল পাবেন।
চুলের যত্নে হেয়ার টনিক হিসেবে কারি পাতার তেল
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেকটা হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে। আপনি নারীকেল
তেলের সাথে কারি পাতা নিয়ে মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। এই হেয়ার টনিক এই
হেয়ার টনিক ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের আদ্রতা যেমন দূর হবে তেমনি এটি আপনার
চুলকে গোড়া থেকে মজবুত এবং শক্তিশালী করে তুলবে। তো চলুন এই হেয়ার টনিক আপনি
কিভাবে তৈরি করবেন তা জেনে নিন। প্রয়োজনীয় উপকরণ:
কারি পাতা দশটি তাজা কারি পাতা এবং
নারিকেল তেল 5 চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার:
প্রথমেই আপনি একটি পরিষ্কার পাত্র নিন। এবার পাত্রে নারিকেল তেল ঢালুন এবং
তার সাথে কারি পাতাগুলো যোগ করুন।
বা তার চারপাশ যতক্ষণ না পর্যন্ত কালো বর্ণের হবি ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো করে
নাড়তে থাকবো।
অতঃপর বা তার পাশে কালো হয়ে গেলে চুলার আজ বন্ধ করুন এবং মিশ্রণটি কিছু
সময়ের জন্য ঠান্ডা হতে রেখে দিন।
বেস. টনিকটি ঠান্ডা হয়ে গেলে আপনি শুধুমাত্র তেলগুলো পাতা থেকে
ছেকে নিন । এবং আপনার মাথায় লাগান।
এবারে এই তেল আঙ্গুলের অগ্রভাগে লাগিয়ে আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলের গোড়া
থেকে আগ পর্যন্ত আস্তে আস্তে ভালো মতো মেসেজ করুন।
মেসেজ শেষ হওয়ার পর এক ঘন্টা এই তেলটি আপনার মাথায় রাখুন এবং এক ঘন্টা পর
ঠাণ্ডা পানিতে শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন।
ব্যবহারের সময়সীমাঃ
ভালো ফলাফল পেতে আপনি সপ্তাহে দুই তিন বার আপনার মাথায় তোকে এই তেল ব্যবহার
করুন। এবং প্রতিবার লাগানোর পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত
ব্যবহার এই হেয়ার টনিক আপনার চুল বৃদ্ধিতেও বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
হেয়ার টনিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা:
হ্যাটনিক তৈরির সময় আপনি চুলা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবেন। কারণ
কারিপাতা যখন নারিকেল তেলে ভাসতে থাকবেন তখন পত্র থেকে তেল সিটকে আসার
সম্ভাবনা থাকে।
আপনার ইস্কেপে যদি গুরুতর কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই তেল সেবন করবেন।
নারিকেল তেল এমনিতেই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। এবং আপনার চুলকে
মহেশচড়াইজট রাখতে সাহায্য করে। আর এর সাথে কারি পাতা যোগ হলে নারিকেল তেলের
সকল পুষ্টিগুণ কারি পাতার পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন বি সিক্স এর সাথে মিশে একটি
শক্তিশালী হেয়ার টনিক তৈরি করে। যা নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলকে গোড়া থেকে
মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুল ঝরাও রোধ করে।
কারিপাতা ব্যবহার করে কিভাবে চুল লম্বা করা যায়
কারি পাতা কোন উপায়ে ব্যবহার করে। চুল লম্বা করা যায় তা আমাদের
অনেকেরই অজানা। আর লম্বা ঘন এবং ঝলমলে চুলকে কে না চায় বলুন। তো আপনি যদি
লম্বা ঘন এবং ঝলমলে চুল চান তাহলে কারি পাতার এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি
ব্যবহার করতে পারেন। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল প্রাকৃতিকভাবে
একদিকে যেমন লম্বা হবে।
তেমনি চুল পড়ার প্রবণতার অনেকটাই কমে যাবে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে চুলের
যত্নে এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি আপনি কিভাবে তৈরি করবেন তা জানিয়ে দিচ্ছি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
বিটের খোসা।
কারি পাতা।
আমলকি।
এক টুকরো আদা এবং
পানি।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার:
আপনি প্রথমেই বিট থেকে খোসা ছড়িয়ে খোসা গুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে
নিন।
এরপর কেটে রাখা বিটের খোসার সাথে সতেজ এক মুঠো কারি পাতা আমলকি এক টুকরো আদা
এবং পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে একসাথে ব্লেন্ডারে ব্র্যান্ড করে একটি
পেস্ট তৈরি করে নিন। ব্লেন্ডার না থাকলে শীল পাঠাতেও বেটে নিতে পারেন।
মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে একটি ছ্যাকনি দিয়ে বা পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের
সাহায্যে থেকে এর নির্যাসটুকু বের করে নিন। আমলকি বিট এবং আদার এই নির্যাস
আপনার চুলের গোড়ায় নিয়মিত লাগাতে থাকুন। এবং পরের দিন সকালে চুল ধুয়ে
ফেলুন।
যা হোক বিট এবং আমলকি থেকে প্রাপ্ত এই পেস্ট আপনার চুলে ভালো করে মেসেজ
করে লাগান। এবং একঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে
চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
আমলকি বিটের এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহার আপনার চুলকে একদিন
যেমন মজবুত এবং ঝলমলে করে তুলবে। অন্যদিকে আদার ব্যবহার আপনার চুলকে লম্বা
করতেও সাহায্য করবে।
উপরোক্ত নিয়মে কারি পাতা ব্যবহার করে কিছুদিনের মধ্যেই আপনি পেতে পারেন লম্বা
চুল। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল প্রাকৃতিক ভাবে একদিকে যেমন লম্বা হবে
তেমনি চুল পড়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে।
ত্বকের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছি।, শুধু
চুলের যত্নে নয় বরং ত্বকের যত্নেও কারী পাতা ব্যবহারিত হয়ে আসছে। সেই সুখ
প্রাচীনকাল থেকে চোট জলদি আপনার ত্বকের জিন্না ফেরাতে কারি পাতা দারুন
কাজ করে। কিন্তু কিভাবে আপনি ত্বকের যত্নে ক্যারি পাতা ব্যবহার করবেন। এবার
আপনাদের জানাবো তোদের যত্নে কারি পাতার কিছু ্ ফেসপ্যাক। তাহলে চলুন গাড়ি
পাতার ফেসপ্যাক গুলো জেনে নিন।
কারিপাতা ও হলুদের ফেসপ্যাক। কারি পাতা এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে তৈরি
ফেসপ্যাকটি আপনার ত্বকের জন্য হতে পারে একটি প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিক
ফেসপ্যাক। এবার জেনে নিন কিভাবে তৈরি করবেন এই কারি পাতার হলুদের ফেসপ্যাক।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
কারিপাতা ১০--১২ টি এবং
হলুদ গুঁড়ো-দুই চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার।. প্রথমে কারি পাতাগুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন তারপর
এর সাথে দুই চামচ হলুদ গুলো ভালো করে মিশিয়ে একটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে
ব্র্যান্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন। পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে
এটি ২০-২৫ মিনিট আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন। ২০-২৫ মিনিট পর পেস্টটি
শুকিয়ে গেলে মুখ ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। কারিপাতা এবং হলুদের এই ফেস
প্যাকটি আপনি সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন ব্যবহার করুন। এতে ভালো ফল পাবেন।
কারি পাতা ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক.। কারি পাতা ও মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক
তৈরি করতে আপনি প্রথমে ক্যারি পতার একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন। এরপর তাতে ৩-৪
চামচ মুলতানি মাটি এবং দুই চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে ভালো করে দাঁড়িয়ে একটি পেস্ট
বানিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেলে আপনি মুখে ১৫ মিনিট মতো এই পেস্টিটি লাগিয়ে
রাখুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে মুখ ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। আপনি সপ্তাহে
অন্তত দুই দিন কারি পাতা ও মুলতানি মাটিকে এক ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করলে আপনার তোকে
কোন প্রকার বলি লেখা পড়বে না।
কারি পাতা ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক,। কারিপাতা শুধুমাত্র আপনার ত্বকের রং ফর্সা করে
তা নয় বরং আপনার ত্বকের ব্রণ থাকলে ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের বরুণ দূর
করতে আপনি কারি পাতা পেস্ট এর মধ্যে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক
বানিয়ে ফেলুন। একটি ২০-২৫ মিনিট আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং শুকিয়ে এলে
ঠান্ডা পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। কারি পাতা ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক
কিভাবে কিছুদিন ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক থেকে ব্রণ একেবারেই দূর হয়ে
যাবে।
কারি পাতা ও মধুর ফেসপ্যাক।. ত্বকের ফুসকুড়ি চুলকানি লাল রেশ কালো ছোপ দাগ
ইত্যাদি দূর করতে আপনি কারি পাতার পেস্ট এর সাথে ফুলার সো অর্থ
সামান্য গোলাপজল ২ এবং মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি আপনার
মুখে লাগিয়ে ঠিক ২০ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে
আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বাড়বে তেমনি ত্বকের ফুসকুড়ি চুলকানি প্রকৃতি খুব
সহজেই দূর হবে।
ত্বক ফর্সা করার জন্য আমরা অনেকেই অনেক রকম কসমেটিক বা প্রসাধনী
ব্যবহার করে থাকি। দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রসাধানি ব্যবহারের ফলে একটা সময়
পর ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ত্বকের ক্যান্সারের সম্ভাবনাও অনেকটাই বেড়ে
যায়। তাই ত্বকের ক্যান্সার এড়াতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আপনি প্রাকৃতিক
উপাদান দিয়ে তৈরি উপরোক্ত কারী পাতার ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। যা
আপনার ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী।
চুলের যত্নে কারি পাতার জল
চুলের যত্নে কারি পাতার জলবেশ উপকারী। আপনার চুল যদি ফ্রিজে
বা শুষ্ক রুক্ষ হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কারি পাতার জল আপনার চুলে ব্যবহার
করতেই পারেন। এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন কারী পাতার জল আবার কিভাবে
ব্যবহার করা যায়। সম্মানিত পাঠক। এই কারি পাতার জল আপনি কিভাবে তৈরি করবেন চলুন
তা জানিয়ে দেই।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
জল এক কাপ পরিমাণ এবং
এক মুঠো পরিমাণ কারি পাতা।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার,:
কারি পাতার জল তৈরি করার জন্য আপনি প্রথমেই একটি পুরস্কার পেন নিন।
অতঃপর পরিস্কার পাত্রে এক কাপ পরিমাণ জলের সাথে এক মুঠো টাটকা সতেজ কারি পাতা
মিশিয়ে চুলার হালকা আছে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
জল ফুটানো হয়ে গেলে সবশেষে এই জল একই পরিষ্কার ছ্যাকনি দিয়ে ছেকে নিন এবং
একটি স্নেপে বোতলে ভরে সংরক্ষণ করুন।
তৈরি হয়ে গেলে কারি পাতার জল এবং আপনি আপনার ফ্রিজিং তুলে নিয়মিত এই
জল স্প্রে করে ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার চুলের ফ্রিজিং অনেকটাই কমে
যাবে।
চুলের যত্নে কারি পাতার তৈরি যাওয়া
চুলের যত্নে ক্বারি পাতার নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। কারি পাতার চা এটি শুনে আপনিও
নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই পাতার চা আপনার চুলকে ভালো রাখতে
বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। আপনার চুল কি ঝরে যাচ্ছে আপনি কি চুলের খুশকির
সমস্যায় ভুগছেন আপনার চুলে কি খুব অল্প বয়সেই পাক ধরছে।
আপনার কি চুল পড়ে মাথায় টাক পড়তে শুরু করেছে। এক কথায় বলতে
গেলে রুক্ষ শুষ্ক চুল নিয়ে আপনি ভীষণই চিন্তিত। এবং উদ্বিগ্ন আপনি কি
জানেন আপনার চুলের এইসব সমস্যার সকল সমাধান লুকিয়ে রয়েছে কারি পাতা তৈরি
চা এ্। এখন হয়তো ভাবছেন কারি পাতার চা কিভাবে খেতে হয়। সম্মানিত পাঠক।
আপনি কয়েকটি কারি পাতা জলে ফুটিয়ে নিয়ে।
তাতে সামান্য লেবুর রস এবং স্বাদমতো চিনি যোগ করে খুব সহজেই তৈরি করে ফেলুন কারি
পাতার চা। কিভাবে একটানা সাত দিন কারি পাতার চা খেতে থাকো এতে আপনার চুলের সকল
সমস্যা নিমি সেই দূর হয়ে যাবে। তাছারা নিয়মিত কারি পাতার চাষ সেবনে এটি
আপনার হজম ক্রিয়াকে যেমন উন্নত করে। তেমনি আপনার চুলের স্বাস্থ্য ও ঠিক রাখে।
চুলের যত্নে কারি পাতার আরো কিছু ব্যবহার
চুলের যত্নে ক্যারি পাতার ব্যবহারের আরো কিছু উপায় রয়েছে। কারি পাতায় রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি যা আপনার চুলকে অকালপক্কতা থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া
কারিপাতা প্রোটিন ও এন টি অক্সিডেন্ট শ্রমিকধ হওয়ায় এটি আপনার চুলের
খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
ইতিমধ্যেই চুলে কারি পাতা ব্যবহারের বেশ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আপনাদের
জানানোর চেষ্টা করেছি। এবার চলুন আপনি আরো কি কি উপায়ে চুলে গাড়ি পাতা ব্যবহার
করতে পারেন তা জানিয়ে দেই।
চুলে পেঁয়াজ ও কারি পাতার ব্যবহার.।. আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজ ও কারি
পাতার তৈরির প্যাক বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। পিঁয়াজ ও কারি পাতার ত্যাগ আপনি
কিভাবে তৈরি করবেন চলুন জেনে নেই।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
পেঁয়াজ একটি এবং
কারি পাতা।
প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার..। প্রথমেই আপনি পিয়াজের খোসা ছাড়িয়ে নিন খোসা
ছাড়ানো হলে এর সাথে এক মুঠো সতেজ টোটকা কারি পাতা একসাথে ব্লেন্ডারে
ব্র্যান্ড করি একটি পেস্ট বা মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এরপর কারিপাতা এবং
পেঁয়াজ থেকে তৈরি কিত পেস্ট বা মিশ্রণটিকে একটি পরিষ্কার পাতলা মুসলিম কাপড় বা
সাগ্নির সাহায্যে সেকে এর রসটুকু বের করে নিন। এবার এই রসে তুলা
চুবিয়ে আস্তে আস্তে আপনার চুলের গোড়ায় ভালো করে মেসেজ করে লাগান। এবং তিরিশ
মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তিরিশ মিনিট পর আপনি আপনার চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন।
কারি পাতা ও জবা ফুলের ব্যবহার.।. চুলের যত্নে ক্যারিপাতা ও জবা ফুলের পাতার
পেস্ট বেশ উপকারী এর জন্য আপনি আধা কাপ পরিমাণ কারিপাতা ও জবা ফুলের পাতার সাথে
প্রয়োজন মত পানি মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্র্যান্ড করে নিন। অথবা পাটাই বেটে একটি
মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি তুলে লাগিয়ে প্রায় 40 মিনিটের মত অপেক্ষা করুন।
এবং ৪০ মিনিট পর একটি সতেজ শ্যাম্পুর সাহায্যে চুল ধুয়ে ফেলুন।
মেথি পাতা ক্বারিপাতা ও আমলকি পাতার ব্যবহার.।. মেথি পাতা কারি পাতা এবং
আমলকির প্যাক চুলের ক্ষেত্রে অনেকটা ম্যাজিকের মত কাজ করে। এক্ষেত্রে আপনি
ঠিক আগের মতোই আধা কাপ পরিমাণ মেথি পাতা কারি পাতাও আমলকি একসাথে
ব্লেন্ডার এ ব্যান্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন। এই পেজটি আপনার চুলের
গোড়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ চুলে ভালো করে লাগিয়ে তিরিশ মিনিট অপেক্ষা করুন।
তিরিশ মিনিট পর মাইন্ড স্যাম্পোতে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। এবং চুলে কন্ডিশনার
ব্যবহার করুন।
কারি পাতা ও এলুভেরার ব্যবহার.।. দিন দিন আপনার চুল কি পাতলা হয়ে যাচ্ছে। আপনি
চুলের যত্ন বাড়াতে চাইলে কারি পাতার পেস্ট এবং এলোভেরা জেল একত্রে মিশিয়ে একটি
পেস্ট তৈরি করে এই পেজটি আপনার চুলে লাগান। এবং চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা
অপেক্ষা করুন এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন
নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার ঘনত্ব বাড়বে।
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহারের উপায় হিসেবে আপনি আপনার সুবিধা মত উপরোক্ত
যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুল হবে ঘন ঝলমলে
এবং উজ্জ্বল।
ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কারি পাতা
ঘন কালো চুল পেতে খাদ্য তালিকায় যোগ করুন। কারিপাতা কারন আপনি আপনার দৈনন্দিত
খাদ্য তালিকায় যাওয়া গ্রহণ করবেন। অর্থাৎ আপনার শরীর যা গ্রহণ করবে আপনার চুলও
সেটি গ্রহণ করবে। চুল ঝরে পড়া এবং ঘন করা চুল পেতে আপনি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য
তালিকায় যোগ করতে পারেন। এই কারি পাতা রোজগার খাবারের সাথে আপনি কারিপাতা কিভাবে
খেতে পারেন চলুন তা জানিয়ে দেই।
কারি পাতা রোদে শুকিয়ে সেটি দিয়ে পাউডার তৈরি করে সেটি তরকারি কিংবা ভাতের
সাথে খুব সহজে মিশিয়ে খেতে পারেন।
তাছাড়া আপনি কুচি কুচি করা পুদিনা পাতা এবং কারি পাতার মিশ্রণের সাথে বাটার
মিক্স বা দুধ মিশিয়েও খেতে পারেন।
আবার আপনি কিছু ক্যারিপাতা ভেজে নিয়ে তার মধ্যে স্নিগ্ধ করা বিভিন্ন ধরনের
সবজি মিশিয়েও খেতে পারেন। এভাবে খেলে আপনার রোজকার একঘেয়ে খাবারে একটি নতুন
গ্রাম যুক্ত হবে। কারন কারি পাতার একটি সুন্দর নিজম্ব গন্ধ রয়েছে যা
ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান হিসাবে কাজ করে এবং এটি আপনার চুলের উপকারে আসে।
ক্যারিপাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্তকতা
যদিও কারি পাতা ব্যবহারের তেমন কোন উপকারিতা নেই বললেই চলে। তবুও প্রত্যেকটি
জিনিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সর্তকতা মেনে চলা উচিত। কারি পাতার ব্যবহারের
ক্ষেত্রেও নিম্নলিখিত সর্তকতা গুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন. যেমন..
এলার্জির সমস্যা রয়েছে কারি পাতার এই পেস্ট ব্যবহারের ফলে। তোকে
এলার্জির উদ্বেগ হতে পারে। তাই মাথার ত্বকে কারি পাতা
লাগানোর পূর্বে খানিকটা আপনার ত্বকে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন। তাতে এলার্জির
কোন সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা।
গাড়ি পাতার তেল ব্যবহারের ফলে অনেকের জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। যাদের এই
সমস্যা হবে তাদের গাড়ি কথা ব্যবহার না করাটাই উত্তম।
কারি পাতার বীজ কখনো ভক্ষণ করবেন না কারণ এই বীজ অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে।
সম্মানিত পাঠক, মনে রাখবেন একেক মানুষের চুলের প্রকৃতি একেক রকম হয়ে থাকে। কারি
পাতা ব্যবহার করে কিভাবে আপনি চুল লম্বা করবেন তার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। সুতরাং
আপনার চুলের চাহিদা অনুযায়ী আপনি কারি পাতা ব্যবহার করবেন কি করবেন না সেটা
সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আমার মন্তব্য
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার: আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে আমাদের আর্টিকেল পড়ে
জানতে পেরেছেন। অনেকেই আছেন যারা চুলে অনেক দামী হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন।
আবার অনেকেই চুলের যত্ন ভরসা করেন বিভিন্ন ধরনের প্রকৃতি উপাদানে। সে হিসেবে
প্রকৃতি উপাদানের মধ্যে প্রথমে উঠে আসে কারি পাতার নাম কারি পাতার মধ্যে এমন সব
উপাদান রয়েছে যা আপনার চুল এবং স্কিন স্কেলপের যত্ন নেই।
যার কারণে আয়ুর্বেদী ও কারি পাতা ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত নিয়ম করে এই কারি পাতার
ব্যবহার আপনি আপনার চুলের একাধিক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
সম্মানিত পাঠক: তাহলে দেরি কেন। আজ থেকেই চুলের যত্নে আপনি শুরু করে দিন।
কারি পাতার ব্যবহার উপরিউক্ত এই কৌশল গুলি অবলম্বন করে আপনি পেতে পারেন
স্বাস্থ্যকর ঝলমলে সেস্কি এবং লম্বা চুল।
যদি এই নিয়মগুলো মেনে আপনার একটু হলে ও উপকার হয়. তাহলে নিচে
মন্তব্য করতে ভুলবেন না।
ইনফবারী ২৪নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url