মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম জানুন
মরিঙ্গা পাউডার কিংবা সজনে পাতার পাউডার অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার। এখানে রয়েছে কমলা লেবুর থেকে ৭ গুন বেশি ভিটামিন সি, কিংবা দুধের থেকে দশগুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কিংবা কলার থেকে ২৫ গুণ বেশি পটাশিয়াম, অথবা দুধের থেকে নয় গুণ বেশি পটাশিয়াম।
এইসব পুষ্টি মরিঙ্গা পাউডার এ থাকে।অবশ্যই কি আপনার শরীরে সাতগুণ বেশি ভিটামিন সি, ১০ গুন ক্যালসিয়াম,২৫ গুন পটাশিয়াম, আরো নয় গুণ বেশি পটাশিয়াম দরকার তাহলে, চলুন জেনে আসা যাক মরিঙ্গা পাউডার অথবা সজনে পাতা খাওয়ার পরে কি কি উপকারিতা ও অপকারিতা পাওয়া যায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পেজ সূচিপত্র: মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিত
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম।
- সজনের পাতার পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম।
- সজনে পাতার ছয়টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
- মরিঙ্গা পাউডারের ঔষধি গুনাগুন।
- সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা।
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সাইডএফেক্ট আছে কিনা।
- সজনে পাতা কোন রোগের জন্য উপকারী।
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
মরিঙ্গা গাছের পাতা একটি অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিকর খাবার। এটি মানব দেহের শরীরের প্রয়োজনে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে পরিপূর্। সজনে পাতার পাউডার কিংবা মরিঙ্গা পাউডার খেতে হয় তা জেনে নিই।
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ পরিমাণ মরিঙ্গা গুড়া মিশিয়ে খেতে হবে। এটি শরীরে সারাদিনের শক্তি যোগায় । সজনে পাতা গরম পানিতে দিয়ে মিশিয়ে চা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। এটি শরীরের সর্দি কাশি এবং ঠান্ডা লাগা হতে রক্ষা করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন এক দুই চামচ করে প্রায় 5 থেকে 10 গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার গুড়া খাওয়া প্রয়োজন।
সজনে পাতার পুষ্টিগুণ ও খাবার নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডার কিংবা সজনে পাতার পাউডার অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার। এখানে রয়েছে কমলালেবুর থেকে সাত গুন বেশি ভিটামিন সি, কিংবা দুধের চেয়ে দশগুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কিংবা কলার থেকে 25 গুন বেশি পটাশিয়াম,অথবা দুটো থেকে নয় গুণ বেশি পটাশিয়াম। এইসব পুষ্টি মরিঙ্গা পাউডারে থাকে।
সজনে পাতা আপনি নানা রকম ভাবে খেতে পারেন। যেমন, সজনে পাতার ভাজি এবং সজনে পাতার পাউডার, আরো নানারকম ভাবে সজনে পাতা খাওয়া যায়। যেমন, তার মধ্যে সজিনা ভাজি, সজিনা ভাজির তরকারি ইত্যাদি নানা রকম ভাবে খাওয়া যায়। যা আপনাকে পুষ্টি যোগায়।
সজনে পাতার ৬ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
সজনে এমন একটা গাছ, যার কোন কিছু ফেলে দেওয়া যায় না, সেটা পাতা হতে পারে কিংবা কান্ড হতে পারে, ফুল, ফলও হতে পারে। সজনে ডাটা সবজি হিসেবে ভালো, ডাল হিসেবেও খাওয়া যায়, চচ্চড়িতেও খায়। যার কোন কিছু ফেলে দেওয়াই যায় না।
- মরিঙ্গ আবার সজনে অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি গাছ।
- প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সাইড থাকার কারণে, বয়স জনিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
- রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আর্সেনিকের বিক্রিয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে।
- শরীরের ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ জনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মরিঙ্গা পাউডারের ঔষধি গুনাগুন
সজনে পাতার কিছু ঔষধি গুনাগুন আছে। এবং ঔষধি গুণের কারণে আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে এটি দারুন কার্যকরী। যাদের হাটু ব্যথা আছে, তারা সজনে পাতার ভাজি অথবা পাতার রস খেতে পারেন, বা সজনে পাতার পাউডার খেতে পারেন, সজনে পাতার ভর্তা খান, অথবা গুড়া খান দেখবেন আপনার আর্থ্রাইটিসের কেমন অবস্থা হয়। আমরা জানি যে, আমাদের শরীরে ৭০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে।
প্রতিদিন প্রত্যেকটি কোষের ভেতরে রিঅ্যাকশন হয়। প্রতিমুহূর্তে লক্ষ্য এবং লক্ষাদিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বিক্রিয়া সম্পন্ন হতে গিয়ে, কিছু ভয়াবহ টক্সিন, কিছু ক্ষতিকর পদার্থ সেলের ভিতর তৈরি হয়। এগুলো যদি সেলের ভিতর থেকে যায়, তাহলে আপনি কোনদিন ভালো থাকতে পারবেন না বা সুস্থ থাকবেন না।
- শরীরে কোন অংশ ব্যাথা হলে, ব্যাথা যুক্ত স্থানে শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।
- মরিঙ্গা গাছের শিকড়ের রস কানের ব্যাথার সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ফলাফল দেয়।
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
মরিঙ্গা পাউডার এর প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সাইড থাকে। এতে থাকে এমাইনো এসিড। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পাশাপাশি, সকল ধরনের শারীরিক দুর্বলতা দূর করে দেয়। অন্যদিকে এর গোড়ায় থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান শরীরের অনুপস্থিতিতে পুষ্টি চাহিদা দূর করে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে বা বৃদ্ধি পায়।
তেল জাতীয় খাবার খেলে পেটে এসিডিটির সম্ভাবনা থাকে। পেটের গ্যাস দূর করার জন্য, ওষুধের থেকে প্রাকৃতিক ভাবে উপায় অবলম্বন করে, সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার বেশ উপকারী। সজনে পাতার পাউডার শরীরে এসিডিটির প্রদাহ, গ্যাস দূর করার জন্য অনেক ভালো কাজ করে থাকে। এ পাতার গুনাগুন অনেক বেশি।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সাইডএফেক্ট আছে কিনা
মরিঙ্গা পাউডার গর্ভবতী অবস্থায় মহিলাদের মরিঙ্গা গাছের পাতা, শিকড়ের মূল, ফুল, ছাল এসব এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে তাদের গর্ভে থাকা বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে, এবং যাদের রক্তক্ষরণ ব্যাধি বা রোগ আছে তাদের এটি ব্যবহার করা যাবে না। গর্ভধারণের কয়েক সপ্তাহ পরে, এর ব্যবহার করা উচিত। আপনি যদি ব্লাড প্রেসারের রোগী হন এবং নিয়মিত ব্লাড প্রেসারের ঔষধ খেয়ে থাকেন। তাহলে মরিঙ্গা পাতার পাউডার আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বা খাওয়া যাবেনা। কারণ মরিঙ্গা পাতা খাওয়ার পরে প্রেসার এমনিতেই কমে যায়। প্রেসারের ওষুধের সাথে খাওয়া হলে প্রেসার স্বাভাবিকের থেকে বেশি নিচে নামবে। যা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্ষতিকর।
আরো পড়ুনঃ ঝাপসা ছবি ক্লিয়ার করার ওয়েবসাইট সেরা ৯ টি
কিডনিতে কোন সমস্যা থাকলে, মরিঙ্গা পাতা খাওয়া থেকে দূরে দূরে থাকতে হবে। যদিও দেহের পুষ্টির জন্য পরিমাণ মতো খাওয়া যায়। তবে বেশি খেলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে বমি ভাব, অস্থিরতা ও পেটে নানা রকম ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। পাউডার রক্তের শর্করা কমিয়ে, ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। তবে অন্যান্য ঔষধ বাদ দিয়ে শুধু মরিঙ্গা পাউডার খেলে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে না। তাই এটি কোন ডাক্তার বা রেজিস্টারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া প্রয়োজন।
সজনে পাতার কোন রোগের জন্য উপকারী
সজনে পাতা আমাদের নানা ধরনের কাজে লাগে। সজনে পাতার সাধারণত আমরা ভাজি, সজনে পাতার তরকারি খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে, সজনে পাতার গুড়া, সজনে পাতার ছাল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমাদের শরীরে কোথাও ব্যথা পেলে সজনে পাতা ছাল লাগিয়ে দিলে, তা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বা কমিয়ে দেয়।
সজনে পাতা রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন এবং জিঙ্ক সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান। চুলের যত্নে মরিঙ্গা পাতার ব্যবহার হয়। সজনে পাতায় এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। যেমন, এতে নিয়াজিমিসিন এটি এমন একটি যৌগ যা ক্যান্সারের কোষ কে দমন করতে বা কমতে সাহায্য করে।
শেষ কথাঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
মরিঙ্গা গাছের পাতা একটি অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিকর খাবার। এটি মানবদেহের শরীরে প্রয়োজনে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পরিপূর্ণ করে। যাদের হাটু ব্যথা আছে, তারা সজনে পাতা খান, সজনে পাতার ভর্তা খান দেখবেন আপনার আর্থ্রাইটিসের কি হয়।
সজনে পাতা আপনি নানা রকম ভাবে খেতে পারেন, যেমন সজনে পাতার ভাজি, সজনে পাতার রস, সজনে পাতার পাউডার ইত্যাদি নানাভাবে খাওয়া যায়। সজনে পাতা আমাদের জন্য বেশি উপকারী। তাই আমরা চেষ্টা করব, উপরে যে সমস্যাগুলো বা প্রতিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে, তার যথাযথ মতো করে সজনে পাতা খেতে বা তা খেয়ে উপকৃত হতে পারি।
ইনফবারী ২৪নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url